Sunday, July 10, 2016

সম্যক ধারণাহীনতার পরিণতি ইসলামের অপপ্রয়োগ


কোর’আনে কী নেই? নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, ওশর, দান, সদকা, জেহাদ, কেতাল, হেজরত, বিয়ে, তালাক, কোর’বানি, হায়েজ, নেফাস, শরীয়ত, মারেফত সবই আছে কোর’আনে। কিন্তু এসবের মধ্যে কোনটা আগে কোনটা পরে, কোনটা না হলেও ঠেকে যাবে না, আর কোনটা না হলেই নয় তা কীভাবে নিশ্চিত হবেন? আজ মুসলিম নামধারী এই জাতিটির মধ্যে মত ও পথের এত বিভিন্নতার কারণ মূলত এটিই। কোনটার উদ্দেশ্য কী, কোনটা কখন প্রয়োজন, কেন প্রয়োজন সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্থাৎ আকীদা পরিষ্কার না থাকার কারণে এক একটি দল বা ফেরকা একেক রাস্তায় যাত্রা করেছে। কেউ এগোচ্ছে পলিটিক্যাল ইসলামের পথে, কেউ জঙ্গিবাদের পথে, কেউ মারেফতী বা আধ্যাতিক লাইনে, কেউবা তাবলীগী ধ্যাঁচে। এরা সকলেই নিজেদের পক্ষে কম-বেশি কোর’আনের আয়াত ও হাদীসের রেফারেন্স উপস্থাপন করতে পারঙ্গম, কারণ কোর’আনে তো এই সবই আছে। রসুল তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। কখনো মোশরেকদের অত্যাচার নীরবে সহ্য করেছেন, শুধুই তওহীদের দাওয়াত দিয়ে গেছেন, সন্ধি করেছেন তবু প্রতিঘাতে জড়ান নি, আবার কখনো মোশরেকদের বিরুদ্ধে তীব্র যুদ্ধ করেছেন, হত্যা করেছেন, শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা করেছেন; নবুওয়্যাত লাভের আগে যিনি ছিলেন সংসার ও সমাজবিমুখ ধ্যানি, নবুওয়্যাত লাভের পর তাঁকে ঘোর সংসারী ও সামাজিক জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছে; যিনি তাঁর জাতিকে অকারণে গাছ কাটাকেও নিষেধ করেছেন, সেই তিনিই কিনা অস্ত্র হাতে যুদ্ধের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। প্রকৃত আকীদা না জেনে, এই দ্বীনের গুরুত্বের অগ্রাধিকার অর্থাৎ, কোনটা আগে আর কোনটা পরে, কোনটা এখন আর কোনটা তখন এই সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ না করে আজ বিভিন্ন দল, মত ও ফেরকার অনুসারীরা রসুলাল্লাহর দীর্ঘ জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিচ্ছিন্ন ঘটনাপ্রবাহ ও ওই পরিস্থিতিতে অবতীর্ণ কোর’আনের আয়াত থেকে নিজেদের পছন্দমতো ঘটনা ও আয়াতকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করছেন এবং সেই মতে নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। অথচ এরা কেউই প্রকৃত আকীদার ধারে কাছেও নেই। উদাহরণ: ধরুন আপনার ফোন নাম্বার ০১৭৮৭৬৮২৩৬০; ০ থেকে ৯- এই দশটি ডিজিটকে ব্যবহার করেই কিন্তু নাম্বারটি তৈরি। এখন আমি যদি আপনার সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে চাই তাহলে আমাকে আপনার নাম্বারটিতে ব্যবহৃত ডিজিটগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কল করতে হবে। এর কোনো একটি ডিজিট যদি আগে-পরে করা হয় যেমন, ০১৭৮ দিয়ে শুরু না করে যদি আপনি ০১৮৭ দিয়ে শুরু করেন তাহলে কী ফল হবে সকলেরই জানা, যদিও ৭ ও ৮ উভয়ই আপনার নাম্বারে আছে। কাজেই যারা ইসলামে অমুক আছে, অমুক নেই, অমুক কাজ করা বাধ্যতামূলক, অমুক কাজ করা যাবে না ইত্যাদি বলে নিজেদের মতামতকে প্রতিষ্ঠা করতে চান তাদের আগে জানা উচিত যে, কোন কাজ কোন পরিস্থিতির জন্য, কোন কাজ কোন কাজের উপর নির্ভরশীল, কোনটা আগে আর কোনটা পরে। এই জ্ঞান, অর্থাৎ আকীদা না থাকলে ঈমানের কোনোই দাম নেই এ কথা তো সকল মাজহাবের ইমামই স্বীকার করেছেন, তাই নয় কি? - See more at: http://www.istishon.com/?q=node/16619#sthash.vmIzRX26.dpuf

No comments:

Post a Comment