




ঢাকার গেন্ডারিয়ায় একটি নির্মাণাধীন মসজিদ থেকে মুসল্লিদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে অনলাইনে ব্যাপক সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে প্রকাশ্যে। মসজিদ বন্ধ করার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়কে অভিযুক্ত করে ভিডিও ছাড়া হয়েছে, যেটা ইতোমধ্যেই প্রায় দুই লক্ষ মানুষ দেখেছে এবং হাজার হাজার শেয়ার হয়েছে। অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যাওয়া ওই ভিডিওর সাথে এমন সব উস্কানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করা হচ্ছে যাতে খুব সহজেই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ছে।










অনেকেই সেই ভিডিও দেখে এবং বক্তব্য পড়ে উত্তেজিত হয়ে প্রকাশ্যে হিন্দুধর্মাবলম্বীদেরকে হত্যা ও উচ্ছেদ করার জন্য তথাকথিত জেহাদের ডাক দিচ্ছে। কেউ কেউ প্রতিবাদ হিসেবে মন্দির ভাঙ্গার জন্য প্ররোচনা দিচ্ছে। এই প্রচারণার পেছনে কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ইন্ধন থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। বেশ কিছু বিতর্কিত জাতীয় পযায়ের গণমাধ্যমও বিষয়টিতে সাম্প্রদায়িকতার লেজুড় লাগিয়ে প্রচার করছে। পত্রিকার সেই রেফারেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে উত্তেজনা সৃষ্টির কাজে।




যেখানে মসজিদটি নির্মিত হচ্ছিল, বলা হচ্ছে সেটা সরকারি লিজের জমি, দুই বছরের জন্য নাকি লিজ নেয়া হয়েছে। আইন মোতাবেক লিজের জমিতে কেউ স্থায়ী স্থাপত্য নির্মাণ করতে পারে না। কিন্তু মসজিদ কর্তৃপক্ষের দাবি হচ্ছে- ওই এলাকায় অনেকগুলো মন্দির থাকলেও সেখানে মসজিদ নেই। তাই তারা সেখানে মসজিদ বানাচ্ছে। আর তাতে বাধ সেধেছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়। বলা হচ্ছে- হিন্দুদের পক্ষ থেকে নাকি পুলিশে জিডি করার পর পুলিশ এসে মসজিদ নির্মাণে বাধা দেয় এবং মসজিদ থেকে মুসল্লিদেরকে বের করে দেয়।




বস্তুত ঘটনা যা-ই ঘটুক, মসজিদ বানানো বৈধ হোক বা অবৈধ হোক, হিন্দুরা বাধা দিক বা না দিক, কোনো অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলতে দেয়া যায় না। দেশে আইন আছে, আদালত আছে। কেউ অপরাধ করলে তার শাস্তি দিবে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে পরোয়া না করে যারা হিন্দু মার, মন্দির ভাঙ্গো, মালাউন হঠাও, জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড় ইত্যাদি সন্ত্রাসবাদী স্লোগান দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের অভিসন্ধী নিয়ে ভেবে দেখতে হবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ যদি এখনই সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার আশঙ্কা আছে।







বিভাগ:
No comments:
Post a Comment