কী কইলা? ইসলামের বিরুদ্ধে লেখালেখি করে! আল্লাহ-রসুলকে গালি দিয়ে বই লেখে! নবীকে কটাক্ষ করে ব্লগ লেখে! ইসলামবিরোধী বই-পুস্তক প্রকাশ করে! সাহস কত বড়! নব্বই ভাগ মু’মিন-মুসলমানের দেশে নাস্তিকতার প্রচার করে কার বুকের পাটা এত বড়? ওহে মু’মিন ভাই-ব্রেরাদার, ওহে নবীর সৈনিকরা, ওহে তাওহীদী জনতা, এরপরও তোমরা ঘরে বসে থাকতে চাও? নবীকে মুখ দেখাইবা কেমনে? আল্লাহর সামনে কী জবাব দিবা? তোমরা কি দেখ না, কাফেররা কীভাবে ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে? আসো, আন্দোলন করি, ইসলামকে হেফাজত করি, বাংলার মাটিতে ইসলাম আছে, থাকবে। যারা ইসলামকে ধ্বংস করতে চাইবে তারাই ধ্বংস হবে। ঠিক কিনা বলেন? ঠিক ঠিক ঠিক . . . . .।
.
ইসলামকে হেফাজত করার জন্য কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সারা বিশ্বের দৃষ্টি কেড়েছে। ইসলামকে কটাক্ষ করে ব্লগ লিখেছে বলে ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে আলেম-ওলামা, হুজুরদের নজিরবিহীন প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মিছিল সবাই দেখেছে। তাদের প্রবল আন্দোলনের মুখে সরকার অনেকটাই বাধ্য হয়েছে নাস্তিক-ব্লগারদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে।
.
২০১৩ সালের পর থেকে ধর্ম হেফাজতকারীদেরকে সরকার কতটা ভয় পেতে শুরু করেছে তা সচেতন মানুষমাত্রই জানেন। দেখা গেল- বই মেলায় একটা বই প্রকাশিত হয়েছে যেটাতে ইসলাম ধর্ম নিয়ে বাজে বাজে কথা লেখা আছে, ধর্মকে ছোট করা হয়েছে। ব্যস, শুরু হলো হুমকি। বইমেলা জ্বালিয়ে দেওয়া হবে, গুড়িয়ে দেওয়া হবে, ধর্মপ্রাণ জনতা বসে থাকবে না, এ দেশে ইসলামের প্রতি আক্রমণ সহ্য করা হবে না . . . ইত্যাদি। হুমকিতেই কাজ হয়ে যায়, কিছু করা লাগে না। পরদিন দেখা যায় প্রকাশনা স্টলটি বন্ধ, সামনে পুলিশ পাহারা।
.
অর্থাৎ একদিক থেকে দেখলে আমাদের আলেম-ওলামারা শক্তির জোরে (আদতে সংখ্যার জোরে) ইসলামকে হেফাজত করতে সক্ষম হয়েছেন। দেশে বসে ইসলাম নিয়ে কটাক্ষ করার আগে যে কেউ এখন দশবার ভাবে, তারপর সিদ্ধান্ত নেয় জীবনের ঝুঁকি নিবে কিনা।
.
কিন্তু ভাইসাহেব, আপনারা সামনের মাছি নিয়ে ব্যস্ত থাকাকালীন পিছন দিয়া যে হাতি ঢুকে পড়ছে সেদিকে খেয়াল রাখছেন তো? ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকরা ইসলামকে কটাক্ষ করে বই লিখছে- এটা আজকের নতুন ঘটনা নয়। গত কয়েক শতাব্দী ধরেই তা করা হচ্ছে। আবার ইসলাম নিয়ে ব্লগে লেখালেখি সেটাও নতুন না। অনেক আগে থেকে চলে আসছে। আপনাদের হম্বিতম্বিতেই প্রথম সেগুলো গণমানুষের নজরে পড়ে।
.
যে ব্লগারদের কেউ জানত না, চিনত না, তারা আজ নামকরা ব্লগার হয়েছে, টেলিভিশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টকশো করে আপনাদেরই বদৌলতে। যাদের স্বপ্ন ছিল ইসলাম নিয়ে লেখালেখি করে বিদেশে অ্যাসাইলাম পাওয়া, তাদের স্বপ্নও বাস্তবায়ন হয়েছে আপনাদের কল্যাণে। যে বই হয়ত কয়েক শ’ মানুষও পড়ত না, আপনাদেরই হম্বিতম্বির কারণে সেই বইয়ের নাম এখন লাখ লাখ মানুষ জানে। হাজার হাজার মানুষ সেই বই সংগ্রহ করে পড়ছে। পড়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে।
.
তবে বড় ক্ষতিটা হয়েছে যে, যেহেতু আপনারা ইসলামের ঠিকাদারী নিয়ে রেখেছেন, তাই ইসলামের বিরুদ্ধে এই সমালোচনাটি আরও জোরদার হয়েছে যে, ইসলাম যুক্তির বিপরীতে যুক্তি দিতে অক্ষম, ইসলাম যুক্তিতে নয় শক্তিতে বিশ্বাসী ইত্যাদি।
.
এ গেল সামনের মাছির ব্যাপার, এবার আসেন পেছন দিয়ে কীভাবে হাতি ঢুকছে সেদিকটা দেখা যাক। গত কয়েক দশকে পৃথিবীব্যাপী ইসলামের বিরুদ্ধে প্রধান যে অভিযোগটা উঠেছে তা হচ্ছে- সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ। একটি করে জঙ্গি হামলা হয় আর ইসলামের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেই সমালোচনা এতদিন প্রাণহীন ছিল, নিছক বিদ্বেষে ভরা ছিল, মানুষ গা করত না। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
.
ইসলামের নামে উপর্যুপুরি জঙ্গি হামলা, আল্লাহু আকবার বলে নিরীহ মানুষ জবাই, চাপাতিবাজী, অকল্পনীয় নৃশংসতা ঘটিয়ে জঙ্গিরা সত্যি সত্যিই ইসলামকে বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়া করিয়ে দিয়েছে। মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে- ইসলাম বুঝি সত্যিই জঙ্গিবাদী ধর্ম। ফলে ইসলামবিদ্বেষী রাজনীতি যেমন প্রাণ ফিরে পেয়েছে, পৃথিবীব্যাপী ইসলামকে নিয়ে সন্দেহপ্রবণতাও অনেক বেড়েছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলোতে একবার চোখ বুলালেই বোঝা যায়- চলমান জঙ্গিবাদী হামলাগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কী পরিমাণ ইসলামবিদ্বেষ সৃষ্টি করছে।
.
পৃথিবীতে আজ যে আদর্শিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা নজিরবিহীন। এরকম একটি মুহূর্তে ইসলামকে আমরা বিকল্প আদর্শ হিসেবে মানবজাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারতাম। কিন্তু ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ ইসলামকে এতটাই খাটো করে ফেলেছে যে, বিকল্প আদর্শ হিসেবে ইসলামের নাম প্রস্তাব করার মত অবস্থাও নেই। ইসলাম ছিল মুক্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম, সাম্যের ধর্ম। আজ সে ইসলাম ভয়ের ধর্ম। এতদিন ইসলামের পক্ষের সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে রাজনীতি হত, এখন রাজনীতি হয় ইসলামের বিরুদ্ধের সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে। ইসলাম নিয়ে মানুষের চিন্তার জগতে কতবড় পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে আপনারা তা ভেবে দেখেছেন কি?
.
বাস্তবতা যখন এই, তখন আপনারা ইসলাম হেফাজতের জন্য কী করছেন এ প্রশ্নটি স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়। একটা বই প্রকাশের বিরুদ্ধে, কিংবা একটা ব্লগ লেখার বিরুদ্ধে আপনারা এত সোচ্চার, এত আবেগপ্রবণ, অথচ যে জঙ্গিবাদ ইসলামকে কাঠগড়ায় দাঁড়া করিয়ে দিচ্ছে, ইসলামকে সমস্ত পৃথিবীতে সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করছে তার বিরুদ্ধে এত নীরব কেন? এসব জঙ্গিবাদী হামলার বিরুদ্ধে আপনাদের কোনো সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ চোখে পড়ে না কেন? এর বিরুদ্ধে আপনাদের কোনো আদর্শিক প্রচার-প্রচারণা দেখা যায় না কেন? এর কারণ কি এই যে, জঙ্গিরা আপনাদের স্বার্থে আঘাত করে নি কিংবা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রচারে নামলে রাতারাতি জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার তো সম্ভাবনা নাই-ই, উল্টো কমতেও পারে?
.
ইসলামকে হেফাজত করার জন্য কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সারা বিশ্বের দৃষ্টি কেড়েছে। ইসলামকে কটাক্ষ করে ব্লগ লিখেছে বলে ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে আলেম-ওলামা, হুজুরদের নজিরবিহীন প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মিছিল সবাই দেখেছে। তাদের প্রবল আন্দোলনের মুখে সরকার অনেকটাই বাধ্য হয়েছে নাস্তিক-ব্লগারদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে।
.
২০১৩ সালের পর থেকে ধর্ম হেফাজতকারীদেরকে সরকার কতটা ভয় পেতে শুরু করেছে তা সচেতন মানুষমাত্রই জানেন। দেখা গেল- বই মেলায় একটা বই প্রকাশিত হয়েছে যেটাতে ইসলাম ধর্ম নিয়ে বাজে বাজে কথা লেখা আছে, ধর্মকে ছোট করা হয়েছে। ব্যস, শুরু হলো হুমকি। বইমেলা জ্বালিয়ে দেওয়া হবে, গুড়িয়ে দেওয়া হবে, ধর্মপ্রাণ জনতা বসে থাকবে না, এ দেশে ইসলামের প্রতি আক্রমণ সহ্য করা হবে না . . . ইত্যাদি। হুমকিতেই কাজ হয়ে যায়, কিছু করা লাগে না। পরদিন দেখা যায় প্রকাশনা স্টলটি বন্ধ, সামনে পুলিশ পাহারা।
.
অর্থাৎ একদিক থেকে দেখলে আমাদের আলেম-ওলামারা শক্তির জোরে (আদতে সংখ্যার জোরে) ইসলামকে হেফাজত করতে সক্ষম হয়েছেন। দেশে বসে ইসলাম নিয়ে কটাক্ষ করার আগে যে কেউ এখন দশবার ভাবে, তারপর সিদ্ধান্ত নেয় জীবনের ঝুঁকি নিবে কিনা।
.
কিন্তু ভাইসাহেব, আপনারা সামনের মাছি নিয়ে ব্যস্ত থাকাকালীন পিছন দিয়া যে হাতি ঢুকে পড়ছে সেদিকে খেয়াল রাখছেন তো? ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকরা ইসলামকে কটাক্ষ করে বই লিখছে- এটা আজকের নতুন ঘটনা নয়। গত কয়েক শতাব্দী ধরেই তা করা হচ্ছে। আবার ইসলাম নিয়ে ব্লগে লেখালেখি সেটাও নতুন না। অনেক আগে থেকে চলে আসছে। আপনাদের হম্বিতম্বিতেই প্রথম সেগুলো গণমানুষের নজরে পড়ে।
.
যে ব্লগারদের কেউ জানত না, চিনত না, তারা আজ নামকরা ব্লগার হয়েছে, টেলিভিশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টকশো করে আপনাদেরই বদৌলতে। যাদের স্বপ্ন ছিল ইসলাম নিয়ে লেখালেখি করে বিদেশে অ্যাসাইলাম পাওয়া, তাদের স্বপ্নও বাস্তবায়ন হয়েছে আপনাদের কল্যাণে। যে বই হয়ত কয়েক শ’ মানুষও পড়ত না, আপনাদেরই হম্বিতম্বির কারণে সেই বইয়ের নাম এখন লাখ লাখ মানুষ জানে। হাজার হাজার মানুষ সেই বই সংগ্রহ করে পড়ছে। পড়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে।
.
তবে বড় ক্ষতিটা হয়েছে যে, যেহেতু আপনারা ইসলামের ঠিকাদারী নিয়ে রেখেছেন, তাই ইসলামের বিরুদ্ধে এই সমালোচনাটি আরও জোরদার হয়েছে যে, ইসলাম যুক্তির বিপরীতে যুক্তি দিতে অক্ষম, ইসলাম যুক্তিতে নয় শক্তিতে বিশ্বাসী ইত্যাদি।
.
এ গেল সামনের মাছির ব্যাপার, এবার আসেন পেছন দিয়ে কীভাবে হাতি ঢুকছে সেদিকটা দেখা যাক। গত কয়েক দশকে পৃথিবীব্যাপী ইসলামের বিরুদ্ধে প্রধান যে অভিযোগটা উঠেছে তা হচ্ছে- সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ। একটি করে জঙ্গি হামলা হয় আর ইসলামের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেই সমালোচনা এতদিন প্রাণহীন ছিল, নিছক বিদ্বেষে ভরা ছিল, মানুষ গা করত না। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
.
ইসলামের নামে উপর্যুপুরি জঙ্গি হামলা, আল্লাহু আকবার বলে নিরীহ মানুষ জবাই, চাপাতিবাজী, অকল্পনীয় নৃশংসতা ঘটিয়ে জঙ্গিরা সত্যি সত্যিই ইসলামকে বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়া করিয়ে দিয়েছে। মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে- ইসলাম বুঝি সত্যিই জঙ্গিবাদী ধর্ম। ফলে ইসলামবিদ্বেষী রাজনীতি যেমন প্রাণ ফিরে পেয়েছে, পৃথিবীব্যাপী ইসলামকে নিয়ে সন্দেহপ্রবণতাও অনেক বেড়েছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলোতে একবার চোখ বুলালেই বোঝা যায়- চলমান জঙ্গিবাদী হামলাগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কী পরিমাণ ইসলামবিদ্বেষ সৃষ্টি করছে।
.
পৃথিবীতে আজ যে আদর্শিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা নজিরবিহীন। এরকম একটি মুহূর্তে ইসলামকে আমরা বিকল্প আদর্শ হিসেবে মানবজাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারতাম। কিন্তু ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ ইসলামকে এতটাই খাটো করে ফেলেছে যে, বিকল্প আদর্শ হিসেবে ইসলামের নাম প্রস্তাব করার মত অবস্থাও নেই। ইসলাম ছিল মুক্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম, সাম্যের ধর্ম। আজ সে ইসলাম ভয়ের ধর্ম। এতদিন ইসলামের পক্ষের সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে রাজনীতি হত, এখন রাজনীতি হয় ইসলামের বিরুদ্ধের সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে। ইসলাম নিয়ে মানুষের চিন্তার জগতে কতবড় পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে আপনারা তা ভেবে দেখেছেন কি?
.
বাস্তবতা যখন এই, তখন আপনারা ইসলাম হেফাজতের জন্য কী করছেন এ প্রশ্নটি স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়। একটা বই প্রকাশের বিরুদ্ধে, কিংবা একটা ব্লগ লেখার বিরুদ্ধে আপনারা এত সোচ্চার, এত আবেগপ্রবণ, অথচ যে জঙ্গিবাদ ইসলামকে কাঠগড়ায় দাঁড়া করিয়ে দিচ্ছে, ইসলামকে সমস্ত পৃথিবীতে সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করছে তার বিরুদ্ধে এত নীরব কেন? এসব জঙ্গিবাদী হামলার বিরুদ্ধে আপনাদের কোনো সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ চোখে পড়ে না কেন? এর বিরুদ্ধে আপনাদের কোনো আদর্শিক প্রচার-প্রচারণা দেখা যায় না কেন? এর কারণ কি এই যে, জঙ্গিরা আপনাদের স্বার্থে আঘাত করে নি কিংবা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রচারে নামলে রাতারাতি জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার তো সম্ভাবনা নাই-ই, উল্টো কমতেও পারে?
No comments:
Post a Comment