Saturday, September 10, 2016

চেতনা হোক ঐক্যের মেলবন্ধন

বাঙালি চেতনা = হিন্দু-মুসলিম সৌহাদ্র্যপূর্ণ সহাবস্থান।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা = অসাম্প্রদায়িক, অন্যায়-অবিচারমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলা।
ইসলামী চেতনা = মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নাই। কারও উপর কারও শ্রেষ্ঠত্ব নাই। সব মানুষ আদম-হাওয়া থেকে এসেছে, আর আদম মাটির তৈরি। আল্লাহর কাছে সে-ই বেশি মর্যাদাবান যে মুত্তাকি (ন্যায়নিষ্ঠ, ন্যায়পন্থী)।
হিন্দুত্ববাদী চেতনা = হাজার হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষের লাখ লাখ মানুষের আত্মার চাহিদা যুগিয়েছে হিন্দুধর্ম। নানা মতের নানা পথের মানুষকে পরম স্নেহভরে নিজ বুকে আশ্রয় দিয়েছে যে ধর্মচেতনা, তার মূলশক্তি যে মানবকল্যাণ তাতে সন্দেহ নেই।
সমাজতান্ত্রিক চেতনা = বৈষম্যহীন, শোষণহীন, সাম্য-মৈত্রীর সমাজ।
নাস্তিক্যবাদী চেতনা = ধর্মবিশ্বাসের অপব্যবহার, ধর্মব্যবসা, সাম্প্রদায়িকতা, কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, অশিক্ষা-কুশিক্ষা দূর করে উন্নত, প্রগতিশীল, আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ে তোলা।
নারীবাদী চেতনা = নারী-পুরুষের সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ।
.
অর্থাৎ সকল চেতনারই গোড়ার কথা হচ্ছে- ন্যায়, সাম্য ও শান্তি। সকলেই চায় ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হোক, সমাজে শান্তি আসুক। এদিক দিয়ে আমরা যে চেতনারই ধারক হই না কেন, একই গন্তব্যে ছুটছি সবাই। যদি কোনোদিন আমাদের সামগ্রিক জীবনে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা দেখতে পাই তবে তা সব চেতনাকেই সার্থক করবে, অন্যদিকে ন্যায় পরাজিত রয়ে যাবার অর্থ সকল চেতনার পরাজয়, সে চেতনা যতই নিখুঁৎ হোক, যতই শ্রতিমধুর হোক, যতই সম্ভাবনাময়ী মনে হোক।
.
আজ আমাদের দেশ আক্রান্ত। আমাদের সমাজ আতঙ্কিত। বৈদেশিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো ছোট্ট এই ভূখণ্ডে নখর বসাতে উদ্যত। আমাদের জন্য কালো দৃষ্টান্ত হয়ে আছে সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়ার মত রাষ্ট্র। জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো কীভাবে নোংরা খেলায় মেতে ওঠে তা গত কয়েক দশকে সবার জানা হয়ে গেছে। আমাদের দেশকেও যখন টার্গেট করা হয়েছে তখন বোঝাই যায় এ দেশ নিয়েও তারা নীলনকশা এঁকেছে। এ দেশটাকেও তারা জনশূন্য মরুভূমি বানাতে চায়।
.
তাদের নীলনকশা যদি বাস্তবায়িত হয় তবে আমাদের জেনে রাখা উচিত- কেবল দেশেরই মৃত্যু হবে না, দেশের সাথে মৃত্যু হবে সকল চেতনারও। দেশকে বাঁচানোর এখন একটাই উপায়- নিজেদের মধ্যে যাবতীয় মতপার্থক্য ভুলে ন্যায়ের ‍ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সকল চেতনার মধ্যে পাস্পরিক মিলগুলোকে ঐক্যসূত্র হিসেবে কাজে লাগানো। সবার লক্ষ্য যখন ন্যায় প্রতিষ্ঠা, তখন ‘ন্যায়’ই হতে পারে আমাদের ঐক্যের মেলবন্ধন।
.
আপনি ন্যায়নিষ্ঠ না হলে না খাঁটি বাঙালি হতে পারবেন, না মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতে পারবেন, না ইসলামী চেতনাধারী হতে পারবেন, না হিন্দুত্ববাদী চেতনার ধারক হতে পারবেন, না সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী হতে পারবেন, না নারীবাদী হতে পারবেন। ন্যায়ের ধারক না হলে কোনো চেতনার জন্যই আপনি উপযুক্ত নন।
.
অন্যদিকে আপনি ন্যায়নিষ্ঠ হলে কোনো চেতনাই আপনার কাছে সাংঘর্ষিক মনে হবে না। কারণ আপনি ন্যায়ের ধারক আর সকল চেতনার গোড়ার কথা ন্যায়, শান্তি, সাম্য ও মৈত্রী। তখন আপনার কাছে মনে হবে বাঙালি হওয়া যা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করাও তা, ধর্ম ধারণ করা যা, মানবতাবাদী হওয়াও তা, ধর্ম যা বলে সমাজতন্ত্রও তাই বলে, নাস্তিক্যবাদীরা যার জন্য লড়াই করে ধর্মও তার জন্যই লড়াই করতে শেখায়, নারীবাদীরা যে নারীমুক্তির জন্য সংগ্রাম করে, সেই নারীমুক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনারই একটি অংশ, একইসাথে তা বাঙালি ঐতিহ্যের অংশ ও ইসলামী আদর্শের মর্মকথা।
আসুন, চেতনাগুলোকে বিভেদের দেয়াল না বানিয়ে ঐক্যের বন্ধনী হিসেবে কাজে লাগাই। তাতে দেশ ও চেতনা উভয়ই বাঁচবে।
Like
Comment
Comments
Asad Ali আমাদেরকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে- আমাদের শিশুদেরকেও বাবা-মা’র স্নেহবঞ্চিত হয়ে, ক্ষুধার জ্বালায় অসহায়ভাবে চোখের পানি ফেলতে দিব কিনা।
https://www.facebook.com/preemptivelove/videos/10154365334729343/
Preemptive Love Coalition
July 13
This is one of the children we met in the #Fallujah displacement camps, hours after she and her family escaped #ISIS. Our hearts break for her. She has lost so much. But because of you, she is not alone or forgotten.#LoveAnyway
Aminul Islam Aminul · 3 mutual friends
অসাধারন পোস্ট

No comments:

Post a Comment