মুক্তিযুদ্ধের আগে পর্যন্ত লড়াইটা ছিল কেবলই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। ধর্মকে প্রতিপক্ষ মনে করা হত না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে ধর্মকে অন্যায়ের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এত জঘন্যভাবে কাজে লাগানো হয় যে, ধর্ম ও অন্যায় যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
ধর্মের অপব্যবহার কত কুৎসিত হতে পারে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে। রসুল (সা.) এর বদর যুদ্ধের সাথে তুলনা করে আল বদর বাহিনী গঠন করা, পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করাকে কাফেরের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ’ আখ্যা দেওয়া, নির্বিচারে সাধারণ মানুষ হত্যাকে উৎসাহিত করা, নারীদেরকে গণিমতের মাল বানিয়ে ধর্ষণ করা, লুটপাট চালানো ইত্যাদি করে ধর্মের যে চিত্রটি বাঙালিদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল তা প্রত্যাখ্যাত হবারই যোগ্য ছিল।
কার্যত ধর্ম সেদিন ন্যায়ের পক্ষ নেয় নি, বরং বাঙালির ন্যায্য স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। অতএব, একাত্তরপরবর্তী বাঙালি জাতীয়তাবাদের সাথে ধর্মের যদি কোনো লাগালাগি থাকে- সেটার জন্য তারাই দায়ী যারা একাত্তরে ধর্মের লেবাস পরে নিজেদের রাজনৈতিক ও অন্যান্য স্বার্থে ধর্মকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
No comments:
Post a Comment