‘জীবন’ যদি প্যাসেঞ্জার হয় তবে ‘ধর্ম’ হচ্ছে ড্রাইভার। জীবন স্থবিরতা পছন্দ করে না। সামান্য স্থিরতা, গতিহীনতাও তার ধৈর্যচ্যুতি ঘটায়, বিরক্তির উদ্রেক করে। সে সবকিছুকে পেছনে ফেলে কেবল সামনে এগোতে চায়। বাকিটা ধর্ম অর্থাৎ ড্রাইভারের দায়িত্ব।
জীবনের অভিযাত্রায় ধর্ম যত শক্ত করে স্টিয়ারিং ধরে রাখতে পারে যাত্রা তত মঙ্গলজনক ও নিরাপদ হয়। আর ধর্ম ভারসাম্যহীন হলে, অন্ধ কিংবা বধির হলে যাত্রা বিপদজনক হয়, দুর্ঘটনা ঘটে।
আর যদি ধর্ম এতই জরাজীর্ণ ও রোগগ্রস্থ হয়ে পড়ে যে, জীবনের গতির সাথে তাল মেলানো দূরের কথা ন্যুনতম কর্মদক্ষতাও সে হারিয়ে ফেলে, স্থবির পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে (গণ্ডিতে) পড়ে থাকে, তাহলে ওই পশ্চাদপদ গতিহীন ধর্ম থাকাও যা, না থাকাও তা।
জীবন তখন বাধ্য হয় স্টিয়ারিং নিজের হাতে তুলে নিতে। আনাড়ী-অনভিজ্ঞ হাত তাকে বারংবার দুর্ঘটনায় নিপতিত করে, চারদিক থেকে বিপদের কালো ছায়া নেমে আসে, যাত্রা বিঘ্নিত হয় চরমভাবে, কিন্তু সে থেমে যেতে পারে না। তাকেই চলতেই হয়।
সূর্য যেমন এক সেকেন্ডের কোটি ভাগের এক ভাগ সময়ও আলো প্রদান করা থেকে বিরত থাকতে পারে না, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি যেমন এক সেকেন্ডের জন্যও আকর্ষণ করা থেকে বিরত থাকতে পারে না, তেমনিভাবে জীবনও এক মুহূর্তও থেমে থাকতে পারে না। কারণ চলার নামই জীবন।
ধর্ম ও জীবনের সম্পর্কটাই এমন যে, ধর্ম যদি জীবনকে লীড দিতে চায় তবে তাকেও জীবনের মতই গতিশীল হতে হবে। গতি ফুরালো তো ধর্মের গ্রহণযোগ্যতাও ফুরালো।
No comments:
Post a Comment